আজ বিশ্ব মা দিবস।
মা’ পৃথিবীর সবচেয়ে আপন ও প্রাণের একটি শব্দ। এ শব্দতেই লুকিয়ে থাকে গভীর ভালোবাসা আর মমত্ববোধের আকুলতা। মমতাময়ী ‘মা’ এর কাছেই সন্তানদের হাজারো বায়না, গল্প কত কি! মনের সব লুকোনো কথাগুলোও কেমন করে এই মা জেনে যায়। সব সুখ দুঃখের এক মাত্র প্রিয় বন্ধু হয় মা। এই ‘মা’ নিয়ে অনেকেই লিখে গেছেন তাঁদের নিজেদের মতো করে-
হূমায়ুন আজাদ লিখেছেন-
“আমাদের মাকে আমরা বলতাম তুমি বাবাকে আপনি।
আমাদের মা গরিব প্রজার মতো দাঁড়াতো বাবার সামনে
কথা বলতে গিয়ে কখনোই কথা শেষ ক’রে উঠতে পারতো না
আমাদের মাকে বাবার সামনে এমন তুচ্ছ দেখাতো যে
মাকে আপনি বলার কথা আমাদের কোনোদিন মনেই হয়নি।
আমাদের মা আমাদের থেকে বড়ো ছিলো, কিন্তু ছিল আমাদের সমান,
আমাদের মা ছিলো আমাদের শ্রেণির, আমাদের বর্ণের, আমাদের গোত্রের।”
কিংবা কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর ‘মা’ কবিতায় লিখেছেন –
“যেখানেতে দেখি যাহা
মা-এর মতন আহা
একটি কথায় এত সুধা মেশা নাই,
মায়ের মতন এত
আদর সোহাগ সে তো
আর কোনখানে কেহ পাইবে ভাই!
হেরিলে মায়ের মুখ
দূরে যায় সব দুখ,
মায়ের কোলেতে শুয়ে জুড়ায় পরান,
মায়ের শীতল কোলে
সকল যাতনা ভোলে
কত না সোহাগে মাতা বুকটি ভরান।”
আর কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর ভাষায় –
“আমি যদি দুষ্টুমি করে
চাঁপার গাছে চাঁপা হয়ে ফুটি,
ভোরের বেলা, মা গো, ডালের ’পরে
কচি পাতায় করি লুটোপুটি-
তবে তুমি আমার কাছে হারো-
তখন কি, মা, চিনতে আমায় পারো?
তুমি ডাকো ‘খোকা কোথায় ওরে’,
আমি শুধু হাসি চুপটি করে।”
মা’কে ভালোবাসার জন্য প্রয়োজন নেই কোনো বিশেষ দিন, প্রতিদিনই ভালোবাসা যায় এ মানুষটিকে। তবুও সারা বিশ্বের মানুষ কয়েক যুগ ধরে পালন করছে বিশ্ব মা দিবস। প্রতিবছর মে মাসের ২য় রবিবার বিশ্বব্যাপী এ দিনটি পালিত হয়।আজ সেই বিশ্ব মা দিবস। এ দিবসে সকল মা’য়েদের প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা ও তাদের পায়ে বিনম্র শ্রদ্ধা।