পায়ের জাদুতে কোটি ভক্তের হৃদয় জিতেছেন লিওনেল মেসি। ফুটবলে অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়ে চিরশত্রুকেও সমর্থক বানিয়ে ফেলতে পারেন এই আর্জেন্টাইন সুপারস্টার। যে কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শত শত ভক্ত ইন্টার মিয়ামি তারকার।
মেসির খেলা দেখার জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকেন ফুটবলভক্ত; গুণতে থাকেন ক্ষণ। দূরদুরান্ত ছুটে আসেন প্রিয় তারকার খেলা দেখতে। এমনও দেখা যায়, পুরো গ্যালারিই ভরে গেছে মেসি আর আর্জেন্টিনার জার্সিতে। খেলা যে প্রতিপক্ষের মাঠে হচ্ছে, গ্যালারির এমন অবস্থা দেখে সেটাও নির্ণয় করার উপায় থাকে না।
মেসির কারণেই বিশ্বজুড়ে আর্জেন্টিনা সমর্থকদের সংখ্যাও বহু। আকাশী-সাদাদের খেলা দারুণভাবেই উপভোগ করেন তারা। কিছুক্ষণ পরপরই ধারাভাষ্যকারের মুখে উচ্চারিত ‘মেসি-মেসি’ শব্দ শুনতেই যেন আবেগতাড়িত হন তারা।
আর্জেন্টিনার খেলা দেখতে দেখতে মানুষের ভালোবাসা জন্মেছে অ্যানহেল ডি মারিয়া, লাউতারো মার্টিনেজ, অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার, হুলিয়ান আলভারেজ, এমিলিয়ানো মার্টিনেজদের প্রতিও। এসব তারকারা যেসব ক্লাবে খেলেন, সেসব ক্লাবের ভক্তও বাড়ছে দিনেদিনে। যে কারণে অনেককে এসব ক্লাবের জার্সি গায়েও খেলা দেখতে আসতে দেখা যায়।
এবার মেসি ও আর্জেন্টিনার জার্সি নিয়ে অদ্ভুত এক নিয়ম করলো প্যারাগুয়ে ফুটবল ফেডারেশন। সংস্থাটি জানায়, আগামী ১৫ নভেম্বর ভোরে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ম্যাচটিতে স্থানীয় কোনো দর্শক মেসি ও আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করতে পারবেন না।
উল্লেখ্য, নভেম্বর উইন্ডোতে ২০২৬ বিশ্বকাপ লাতিন আমেরিকা বাছাইপর্বে দুটি ম্যাচ খেলবে আর্জেন্টিনা। ১৫ নভেম্বরের ম্যাচে মেসিদের আতিথেয়তা দেবে প্যারাগুয়ে। এই ম্যাচেই কার্যকর করা হবে অদ্ভুত এই নিয়ম। আলবিসেলেস্তাদের পরের ম্যাচ পেরুর বিপক্ষে নিজেদের ঘরের মাঠে ২০ নভেম্বর।
মেসি ও আর্জেন্টিনার জার্সিতে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্যারাগুয়ের ফুটবল ফেডারেশনের লাইসেন্সিং ম্যানেজার ফার্নান্দো ভিলাসবোয়া।
তিনি বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে স্থানীয় পর্যায়ে সতর্কবার্তা দিয়েছি। আমরা প্যারাগুয়ে কিংবা নিরপেক্ষ জার্সি ছাড়া গ্যালারির স্বাগতিক সমর্থকদের অংশে প্রবেশের অনুমতি দেবো না। প্রতিপক্ষের জার্সি পরে যারা আসবেন, তারা থাকতে পারবেন না।’
স্টেডিয়ামে খুব স্বাভাবিকভাবেই মেসিভক্তরা শোরগোল করেন বেশি। স্থানীয় কোনো দর্শক প্রতিপক্ষ দলের সমর্থন করবে, এটা মেনে নিতে পারছে না প্যারাগুয়ে। সে কারণেই মেসি ও আর্জেন্টিনার জার্সি নিষিদ্ধের উদ্যোগ নিয়ে দেশটি। এমনকি আর্জেন্টিনার কোনো ফুটবলারের ক্লাবের জার্সি পরিহিত কাউকেও গ্যালারিতে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
এ বিষয়ে ভিলাসবোয়া বলেন, ‘যেসব ক্লাবের জার্সিতে প্রতিপক্ষ দলের খেলোয়াড়দের নাম থাকবে, সেগুলোকেও আমরা অনুমতি দেবো না।’
ভিলাসবোয়া জানান, বিশেষ কোনো খেলোয়াড়কে উদ্দেশ্য করে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
ফেডারেশনের লাইসেন্সিং ম্যানেজার বলেন, ‘এটা নির্দিষ্ট কোনো খেলোয়াড়ের বিপক্ষে অবস্থান নয়। ফুটবলারদের ক্যারিয়ারের প্রতি আমাদের সম্মান আছে। এটা শুধু আমাদের ঘরের মাঠে সুবিধা পাওয়ার জন্য জরুরিভাবে নেওয়া।’
মেসিদের জার্সি গায়ে জড়ানোয় নিষেধাজ্ঞার ঘটনা এবারই প্রথম নয়। আগেও এমনটা হয়েছিল। যদিও সেটা আন্তর্জাতিক ম্যাচ ছিল না। নিষিদ্ধ হয়েছিল ইন্টার মিয়ামিতে মেসির ‘১০ নম্বর’ জার্সি।
গেল মার্চে কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়ন কাপের ম্যাচে গ্যালারির নির্দিষ্ট কিছু অংশে প্রতিপক্ষের জার্সি নিষিদ্ধ করেছিল প্রতিপক্ষ ক্লাব ন্যাশভিলে।