প্রত্যাশা নিউজ: টেকনাফ স্থল বন্দরের চুক্তিভিত্তিক দৈনিক ১৩০ টাকা বেতনের কর্মচারী মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম বিভিন্ন পেশার মানুষের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন। পরে দালালির সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অবৈধভাবে ৪৬০ কোটি টাকার সম্পদের মালিক বনে যান তিনি।
মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল সোমবার মধ্যরাতে মোহাম্মদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে নুরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৫০০ জাল টাকা, ৩ লাখ ৮০ হাজার মিয়ানমার মুদ্রা, ৪ হাজার ৪০০ পিস ইয়াবা এবং নগদ ২ লাখ ১ হাজার ১৬০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
খন্দকার আল মঈন বলেন, নুরুল ২০০১ সালে বন্দরে চুক্তিভিত্তিক দৈনিক ১৩০ টাকা হারে কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরি নেয়। চাকরির সুবাদে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে উঠে নুরুলের। সেখানে বিভিন্ন রকম দালালির সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। চোরাকারবারি, শুল্ক ফাঁকি, অবৈধ পণ্য খালাস, দালালির মাধ্যমে সে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, নুরুল টেকনাফ বন্দর কেন্দ্রিক দালালি সিন্ডিকেটের অন্যতম মূলহোতা। তার সিন্ডিকেটের ১০-১৫ জন সদস্য রয়েছে। যারা বিভিন্ন দলে বিভক্ত। এই সিন্ডিকেটটি পণ্য খালাস, পরিবহন সিরিয়াল নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি অবৈধ মালামাল খালাসে সক্রিয় ছিল। সিন্ডিকেটের সহায়তায় পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে কাঠ, শুটকি মাছ, বরই আচার, মাছ ইত্যাদির আড়ালে অবৈধ পণ্য নিয়ে আসে।
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, চক্রটির সদস্যরা টেকনাফ বন্দর, ট্রাক স্ট্যান্ড, বন্দর লেবার ও জাহাজের আগমন-বর্হিগমন নিয়ন্ত্রণ করত। এছাড়া নুরুলের সাথে চিহ্নিত মাদক কারবারিদের যোগসাজশ আছে। সে অন্যান্য অবৈধ পণ্যের কারবারের জন্য হুন্ডি সিন্ডিকেটের সাথে সমন্বয় এবং চতুরতার সাথে আন্ডার ও ওভার ইনভয়েজ কারসাজি করত।
তিনি আরও বলেন, নামে বেনামে তার বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তিনি জাহাজ শিল্প ও ঢাকার কাছাকাছি বিনোদন পার্কে বিনিয়োগ করেছেন। বিভিন্ন ব্যাংকে তার ১৯টি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। ঢাকায় তার ৬টি বাড়ি ও ১৩টি প্লট রয়েছে। এছাড়াও সাভার, টেকনাফ, সেন্টমার্টিন, ভোলাসহ বিভিন্ন জায়গায় নামে বেনামে ৩৭টি প্লট ও বাগানবাড়ি রয়েছে। তার অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদের আনুমানিক মূল্য ৪৬০ কোটি টাকা।